টানা ১ মাস ১ দিন পরে ধর্মঘট স্থগিত করে কাজে যোগ দিয়েছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের(বিসিসি) প্রায় ২ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ভিত্তিতে আজ বেলা সাড়ে ১২ টার দিকে তারা ধর্মঘট স্থগিত করার এ ঘোষনা দেয়। এরআগে সকালে বরিশাল নগরের সার্কিট হাউজের সভাকক্ষে বরিশালের বিভাগীয় কমিশানর মোঃ শহিদুজ্জামান ও জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমানের মধ্যস্থতায় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে মেয়র আহসান হাবিব কামাল ও আন্দোলকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সমঝোতা বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ স্থায়ী কর্মকতা-কর্মচারীদের ২ মাসের বকেয়া বেতন ও ৩ টি প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকা এবং দৈনিক মুজরূী ভিত্তিক শ্রমিকদের ২ মাসের বকেয়া বেতন দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয় এবং আগামী ৭ এপ্রিলের মধ্যে আরো ১ মাসের বকেয়া বেতন পরিশোধের সিদ্ধান্ত হয়। পাশাপাশি ওই বৈঠকে আগামী ২৭ মার্চ আরো একটি সমঝোতা বৈঠকের মাধ্যমে বকেয়া বেতন পরিশোধের স্থায়ী সমাধান করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশেনের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা ও আন্দোলকারীদের নেতা দীপক লাল মৃধা জানান, বকেয়া বেতনের দাবীতে আমরা বরিশাল-১ আসনের সাংসদ ও মন্ত্রী পদমর্যাদাপ্রাপ্ত আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র স্মরণাপন্য হই। তার হস্তক্ষেপে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের মধ্যস্ততায় সমঝোতা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। যে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়র দাবী মেনে নেয়ায় বেলা ১ টা থেকে আন্দোলনরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যার যার কর্মে যোগ দিয়েছেন। বরিশাল নগরজুড়ে গত ৩ দিন ধরে যে বর্জ্য জমা পড়েছে তা পরিষ্কার করার কাজ শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের বর্জ্য অপসারণ কাজ সম্পন্ন করা হবে। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, সকলের সহযোগীতায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলনের পথ থেকে সরে কাজে যোগ দেয়ার ঘোষনা দিয়েছে। এটা ভালো, তবে বিগত ১ মাসের অধিক সময় ধরে আন্দোলনের ফলে যে ক্ষতি হয়েছে কর্পোরেশন ও নগরবাসীর তা তারা বাড়তি কাজের মাধ্যমে পুশিয়ে দিবে বলে আমাকে জানিয়েছেন। পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশনের আয়ের খাতে ২৩ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে, তা আদায়ে সর্বোচ্চ সহযোগীতা ও কর্মকান্ড পরিচালনা করবেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আয় যতো বাড়বে, বেতনও ততো সঠিকভাবে পাবে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তিনি বলেন, হিসাব শাখায় মাত্র ১ কোটি টাকা রয়েছে এখন বেতন দিতে যে টাকা প্রয়োজন তা বিকল্প একটি ফান্ড থেকে ধার নেয়া হবে। আবার কর্পোরেশনের বকেয়া টাকা আদায় হলে সেই ফান্ডে তা ফিরিয়ে দেয়া হবে। বরিশালের জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমান বলেন, সুন্দর একটি বৈঠকে আলোচনার মধ্য দিয়ে দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আন্দোলন থেকে সরে দাড়িয়েছে। তারা কাজে যোগদান দিয়ে সকল ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের আয়ের খাত ট্যাক্সের বকেয়া টাকা দ্রুত উত্তোলন করা হবে। প্রাইভেট সেক্টরের টাকা কর্পোরেশনের কর্মকর্তারা আদায়ে সহায়তা করবেন এবং সরকারি দফতরে তারা বকেয়া আদায়ে যে চিঠি দিবে তার অনুলিপি জেলা প্রশাসনকেও দিবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কর্পোরেশনের পাওনা টাকা উত্তোলনে সহায়তা করা হবে। তিনি বলেণ, সিটি কর্পোরেশন যাতে সুচারভাবে চলে সে জন্য সকল পদক্ষেপ নেয়া হবে। আগামী ২৭ মার্চ আরো একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে সিটি কর্পোরেশনের চলমান সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে। যাতে এরকম অচলঅবস্থায় আর না পড়তে হয়। উল্লেখ্য উল্লেখ্য গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বকেয়া বেতন ও প্রভিডেন্ট ফান্ডের টাকার জন্য কর্মবিরত, অবস্থান কর্মসূচী, মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে আসছে সিটি কর্পোরেশনের স্থায়ী ও দৈনিক মজুরী ভিত্তিক ২ হাজারের ওপর কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিকরা।
Desing & Developed BY EngineerBD.Net
Leave a Reply